হারপিস জোস্টার কী, কেন হয়, ও কীভাবে ভালো হয়


হারপিস জোস্টার (Shingles): কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা







হারপিস জোস্টার এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। এই রোগটি হারপিস ভাইরাস স্নায়ুকোষে আক্রমণ করার ফলে হয়। হঠাৎ ত্বকের একটি নির্দিষ্ট অংশে তীব্র জ্বালাপোড়া বা ব্যথা অনুভূত হয়, এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে ছোট ছোট ফুসকুড়ি বা ফোস্কা উঠতে শুরু করে।




সুপ্ত ভাইরাসের পুনর্জাগরণ ও হারপিস জোস্টারের উৎপত্তি



জলবসন্ত সেরে যাওয়ার বহুদিন পরেও এর জীবাণু স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় লুকিয়ে থাকতে পারে। পরবর্তীতে কোনো কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হয়ে গেলে এই ভাইরাসটি আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং পুনরায় সংক্রমণ ঘটায়। এই পুনরায় সক্রিয় হওয়া সংক্রমণকেই ‘হারপিস জোস্টার’ বলা হয়।

 





লক্ষণ গুলো : 


হঠাৎ করে ত্বকের এক পাশে তীব্র জ্বালাপোড়া ও ব্যথা অনুভূত হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে জলবসন্তের মতো ছোট ছোট ফুসকুড়ি দেখা দেয়। সাধারণত এটি শরীরের নির্দিষ্ট অংশে ঘটে এবং শুধু ডানে অথবা বামে  যেকোন এক পাশে সীমাবদ্ধ থাকে।






পরীক্ষা-নিরীক্ষা:



হারপিস জোস্টার শনাক্ত করার জন্য সাধারণত কোনো বিশেষ পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। রোগীর উপসর্গ, ত্বকের ফুসকুড়ির ধরন এবং চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ থেকেই সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। তবে কিছু ক্ষেত্রে যদি রোগীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য সম্পর্কিত পরীক্ষাও করা যেতে পারে।






চিকিৎসা:


হারপিস জোস্টারের চিকিৎসায় অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ও ক্রিম সবচেয়ে কার্যকর। ব্যথা কমানোর জন্য প্রিগাবালিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। আক্রান্ত স্থানের ফুসকুড়ি বা দানা চুলকানো একেবারেই উচিত নয়, এতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। প্রয়োজনে ঠান্ডা পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে সেঁক দিলে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া কিছুটা উপশম হয়।





দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা:



হারপিস জোস্টারের ফুসকুড়ি শুকিয়ে গেলেও ত্বকে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা দীর্ঘদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। এ অবস্থাকে বলা হয় ‘পোস্ট-হারপেটিক নিউরালজিয়া’ (Post-Herpetic Neuralgia)।
এই ব্যথা উপশমে প্রিগাবালিন বা অ্যামিট্রিপটাইলিন জাতীয় ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে সেবন করতে হয়। সাধারণত হারপিস জোস্টার পুরোপুরি সেরে যেতে ২–৩ সপ্তাহ সময় লাগে, তবে পোস্ট-হারপেটিক নিউরালজিয়ার চিকিৎসা অনেক সময় ৬ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত চলতে পারে।
যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী উপসর্গ বা ব্যথার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

Post a Comment

Previous Post Next Post