প্রস্টেট (প্রজনন গ্রন্থি) ক্যান্সার: লক্ষণ ও প্রতিকার।
পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সারের একটি হলো প্রস্টেট ক্যান্সার।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে ক্যান্সার ধীরে ধীরে অগ্রসর হলে কিছু সতর্ক সংকেত প্রকাশ পেতে শুরু করে। এই সংকেতগুলো আগে থেকে জানা থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া সহজ হয়।
প্রস্টেট ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ:
১) মূত্রসংক্রান্ত সমস্যা
✦বারবার প্রস্রাবের প্রয়োজন, বিশেষ করে রাতে
✦প্রস্রাব শুরু করতে বা থামাতে অসুবিধা
✦দুর্বল প্রস্রাব প্রবাহ বা মাঝপথে থেমে যাওয়া
✦কাশি বা হাসির সময় প্রস্রাব লিক হওয়া
✦দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে না পারা
✦প্রস্রাবের সময় জ্বালা বা ব্যথা
✦মলদ্বারে চাপ বা অস্বস্তি
২) রক্তপাত
✦প্রস্রাবে রক্ত আসা
✦বীর্যে রক্ত দেখা
৩) যৌনগত সমস্যা
✦হঠাৎ ইরেকশন সমস্যা শুরু হওয়া
✦বীর্যপাতের সময় ব্যথা বা অস্বস্তি
✦স্বাভাবিকের তুলনায় কম বীর্য নির্গত হওয়া
৪) অ্যাডভান্সড প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ
✦নিচের অঙ্গ ফোলা বা দুর্বল হয়ে যাওয়া
✦হাড়ে ছড়িয়ে পড়লে কোমর, নিতম্ব বা পিঠে স্থায়ী ব্যথা
✦মলত্যাগে সমস্যা বা কনস্টিপেশন
✦পায়ে টান ধরা বা অসাড়তা
✦হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া ও শরীর দুর্বল হয়ে পড়া
✦অতিরিক্ত ক্লান্তি, বমি ভাব বা বমি হওয়া
সচেতনতা ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন।
✔️ স্বাস্থ্যকর খাবার: ফল ও শাকসবজি যেমন ব্লুবেরি, পালংশাক, মটর, কমলা, জাম্বুরা—এগুলোতে থাকা ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
✔️ নিয়মিত ব্যায়াম: শারীরিক কার্যকলাপ ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে।
✔️ সামগ্রিক স্বাস্থ্যকর জীবনধারা: ধূমপান এড়িয়ে চলা, ওজন নিয়ন্ত্রণ, পর্যাপ্ত ঘুম—এসব অভ্যাস ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
🧪 নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
🔹 প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসার কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশি হয়।
🔹 PSA (Prostate-Specific Antigen) টেস্ট প্রস্টেট ক্যান্সার প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।এবং ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকা, প্রতিরোধে সাহায্য করে।
প্রস্টেট ক্যান্সার আসলে কী?
আমাদের শরীরে ক্যান্সার সাধারণত তখনই হয় যখন কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
প্রস্টেট গ্রন্থি হলো পুরুষদের প্রজনন অঙ্গের একটি অংশ, যা শুক্রাণুকে পরিবাহিত করতে সেমিনাল তরল তৈরি করে। এই গ্রন্থিতে ক্যান্সার তৈরি হলে সেটিই প্রস্টেট ক্যান্সার।
সতর্কবার্তা
মনে রাখতে হবে, এই উপসর্গগুলো সবসময় প্রস্টেট ক্যান্সারের জন্য নাও হতে পারে।
তবে কোনো উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়?
প্রস্টেট ক্যান্সার সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধের কোনো নিশ্চিত উপায় নেই।
তবে জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও সচেতনতা ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সময়মতো চিকিৎসা জীবন রক্ষা করতে পারে।
Post a Comment