যেসব খাবার খেলে আশংকা জনক ভাবে কমে যাবে শুক্রাণু, এবং যেসব খাবার খেলে বৃদ্ধি পাবে শুক্রাণু।

🧪 কি বলছে গবেষণা ?


পৃথিবীতে বহু মানুষ চাইলে ও সন্তানধারণ করতে পারেন না। এর একটি অন্যতম প্রধান কারণ, পুরুষদের শুক্রাণুর সমস্যা। পরিসংখ্যান বলছে, বিগত (৪০) বছরে বিশ্বে পুরুষদের শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে গড়ে (৫৯) শতাংশ। ঠিক কী কারণে এমনটা ঘটছে, তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। 

তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা বলছে, দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে বন্ধ্যত্বর আশঙ্কা । দেখে নিন, কী কী খাবার খেলে বেড়ে যেতে পারে এই আশঙ্কা।


শহুরে জীবনে ব্যস্ততার কারণে এখন অনেকেই রান্না করা গরম ভাত-তরকারির বদলে হাতের কাছে পাওয়া প্যাকেটজাত, রেডিমেড বা ফাস্টফুডে ভরসা করছেন। অফিসের বিরতিতে, আড্ডায় কিংবা সন্ধ্যার নাস্তায় - আল্ট্রা প্রসেসড ফুড বা অতি,প্রক্রিয়াজাত খাবার হয়ে উঠছে নিত্যসঙ্গী। সহজলভ্য, ঝটপট খাওয়া যায়, আর স্বাদেও মজাদার - এই সুবিধার জন্যই মানুষ দিন দিন এসব খাবারের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।


কিন্তু, এই সুবিধার আড়ালে লুকিয়ে আছে মারাত্মক ক্ষতি। চিকিৎসকরা আগেই বারবার সতর্ক করেছেন, এসব খাবার শরীরের জন্য মোটেই ভালো নয়। এবার নতুন এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে আরও ভয়াবহ তথ্য, পুরুষদের ক্ষেত্রে আল্ট্রা প্রসেসড ফুড সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে শুক্রাণুর ওপর। অর্থাৎ, স্বাদের আনন্দে খাওয়া এই খাবার দীর্ঘমেয়াদে- পুরুষের প্রজনন ক্ষমতাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অতি_প্রক্রিয়াজাত খাবারের অতিরিক্ত ব্যবহার পুরুষদের স্পার্ম কাউন্ট, বা শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস করতে পারে। শুধু তাই নয়, একই ক্যালোরি গ্রহণ করলেও এই খাবার ওজন দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। 




✧বিশেষজ্ঞ সারাংশ জৈনের মতে, 


এ ধরনের খাবার পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যের ওপরও খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্যে উঠে এসেছে,, যারা বেশি পরিমাণে হাই ক্যালোরি আল্ট্রা প্রসেসড খাবার খান,, তাদের শরীরে ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH) এর মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কম থাকে। অথচ শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য এই হরমোন অত্যন্ত জরুরি। এর ফলে শুক্রাণুর গতি ও কার্যকারিতা দুটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।


গবেষকরা মনে করছেন, এর অন্যতম কারণ হতে CXminp নামক রাসায়নিক,, যা হরমোনের মাত্রায় বড়সড় পরিবর্তন আনতে সক্ষম। এই এন্ডোক্রাইনের সমস্যা শুধু শুধু শু্ক্রানু হ্রাস করে, তা নয়, সামগ্রিক যৌন হরমোনের ভারসাম্যকেও নষ্ট করে দেয়।


সহজ কথায় স্বাদের প্রলোভনে আমরা, যে খাবারের দিকে ঝুঁকছি, তা কিছুক্ষণের জন্য আনন্দ দিলেও দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ,, যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক ও কম প্রক্রিয়াজাত খাবারকে অগ্রাধিকার দিন।




➤ এ ছাড়া ও যে ৪ টি খাবার খেলে পুরুষের শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যায়।



১) সম্পৃক্ত ফ্যাটিঅ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার :

 ট্রান্স ফ্যাট ও আনস্যাচুরেটেড, ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার শুক্রাণু উৎপাদনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে।


২) প্রক্রিয়াজাত মাংস:

 বিশেষজ্ঞদের মতে প্রক্রিয়াজাত মাংস শুক্রাণুর পরিমাণ হ্রাসের অন্যতম প্রধান কারণ। প্রক্রিয়াজাত মাংস তেও প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট ও আনস্যাচুরেটেড, ফ্যাটিঅ্যাসিড থাকে। পাশাপাশি, এই ধরনের মাংসে কৃত্রিম সংরক্ষক ও উৎসেচকের অবশিষ্টাংশ থাকে। তা শুক্রাণু উৎপাদনে সমস্যা তৈরি করতে পারে।


৩)ধূমপান  ও মদ্যপান : 

একাধিক গবেষণা বলছে,, গাঁজা ও সিগারেট শুক্রাণুর সমস্যা ডেকে আনতে পারে। মাঝেমধ্যে মদ্যপান করলে খুব একটা অসুবিধা না হলেও, নিয়মিত অতিরিক্ত মদ্যপান শুক্রানুর গঠন গত বিকৃতি ঘটাতে পারে।

৪) অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ: 

উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য ফসলে যে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। সে রাসায়নিক পদার্থগুলিও শুক্রাণুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার, অধিকাংশ খাদ্যেই এ ধরনের রাসায়নিক মিশে থাকে, যা এড়িয়ে যাওয়া কঠিন। সবজি রান্নার আগে ভাল করে ধুয়ে নেওয়া ছাড়া এ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ দূর করার কোনোও আলাদা উপায় নেই। তবুও শাক-সবজি সম্পূর্ণ ভাবে রাসায়নিক মুক্ত করা অত্যন্ত কঠিন।


৫) অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার:

যে খাবার গুলাতে অতিরিক্ত চিনি থাকে সেগুলা খাবার ও আমাদের দৈনন্দিন খাবার তালিকায়,  কম রাখা উচিত।



❖ শুক্রাণু বৃদ্ধির উপায়: যে খাবারে গুলো খেলে পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।




শুক্রাণুর পরিমাণ (Sperm Count) এবং গুণগত মান (Motility, Morphology) ভালো রাখতে বা বাড়াতে সঠিক খাবার ও পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  


✧ বৈজ্ঞানিকভাবে শুক্রাণু উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে এমন খাবার গুলো। 




1. জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার 

ডিম, গরুর মাংস, মুরগির মাংস, বাদাম, কুমড়ার বীজ, ডাল। জিঙ্ক টেস্টোস্টেরন হরমোন ও শুক্রাণু উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ।

2. ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবার 

কমলা, লেবু, পেয়ারা, আমলকি
ভিটামিন C শুক্রাণুকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে এবং মান উন্নত করে।

3. ভিটামিন E সমৃদ্ধ খাবার :

কাঠবাদাম,  কাজুবাদাম, আখরোট, সূর্যমুখীর বীজ, চিনাবাদাম, অলিভ অয়েল, ইত্যাদি। 
ভিটামিন E শুক্রাণুর গুণগত মান ও গতি বাড়াতে সাহায্য করে

4. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড 

ইলিশ, রুই, কাতলা, সারডিন, স্যামন, ফিশ অয়েল ক্যাপসুল
শুক্রাণুর মেমব্রেনকে শক্তিশালী করে এবং চলাচল ক্ষমতা (motility) বাড়ায়।
 

5. ফোলেট (Vitamin B9)  

পালং শাক, ব্রোকলি, ডাল, কলা, অ্যাভোকাডো
নতুন কোষ ও ডিএনএ তৈরি করতে সাহায্য করে, যা শুক্রাণুর মান উন্নত করে।


6. সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার  

ডিম, মাছ, বাদাম, রসুন, শুক্রাণুর গতি (motility) উন্নত করে।


8. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল 

আঙুর, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ডালিম, শুক্রাণুর DNA ক্ষতি থেকে বাঁচায়।

✧ সংক্ষিপ্ত ভাবে বললে, যদি নিয়মিত ডিম, মাছ, বাদাম, শাকসবজি, ফল এবং দুধ খান, তাহলে শুক্রাণুর সংখ্যা ও মান দুই-ই উন্নত হবে।

Post a Comment

أحدث أقدم