তরুণী নারীদের হার্ট অ্যাটাক বেড়ে যাচ্ছে — জানুন কারণ ও প্রতিরোধের উপায়

 কম বয়সী মহিলাদের মধ্যেও বাড়ছে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি — জানুন আসল কারণগুলো

 


 

 


দীর্ঘদিন ধরে মনে করা হতো, হার্ট অ্যাটাক এমন এক সমস্যা যা সাধারণত বয়স বাড়লে দেখা দেয়। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপজের পর হৃদরোগের আশঙ্কা বেড়ে যায় — এমনটাই প্রচলিত ধারণা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতি বদলেছে। এখন দেখা যাচ্ছে, তরুণী ও মধ্যবয়সী মহিলাদের মধ্যেও হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বাড়ছে দ্রুত।

দ্য আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিয়োলজি-র জার্নালে প্রকাশিত মেয়ো ক্লিনিকের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অনেক তরুণীর হার্ট অ্যাটাকের কারণ শুধুমাত্র ধমনীতে প্লাক জমা নয়। বরং আরও কিছু গোপন কারণ এর পেছনে কাজ করছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো কী—




 মানসিক চাপ ও স্ট্রেস


বর্তমান জীবনে কাজ, পরিবার, সন্তান — সবকিছু একসাথে সামলাতে গিয়ে মহিলারা প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। এতে শরীরে কর্টিসল নামে এক ধরনের স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়, যা রক্তচাপ ও প্রদাহ বাড়ায় এবং হৃদপিণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি করে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়ে।



 অটোইমিউন রোগ


লুপাস বা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস-এর মতো অটোইমিউন সমস্যা মহিলাদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যায়। এসব রোগ শরীরে অতিরিক্ত প্রদাহ তৈরি করে এবং রক্তনালীর ক্ষতি ঘটায়, যা পরবর্তীতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।



 গর্ভাবস্থায় জটিলতা


গর্ভাবস্থায় প্রিক্ল্যাম্পসিয়া, জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস, বা হাইপারটেনশন পরবর্তীকালে হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায়। কিন্তু অনেক সময় রোগী ও চিকিৎসক কেউই এই সম্পর্কটা বুঝতে পারেন না।

 


 

 

 

হরমোনের পরিবর্তন


মেনোপজের শুরুতে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়, ফলে হার্টের প্রাকৃতিক সুরক্ষা দুর্বল হয়। এছাড়া হরমোনাল জন্মনিয়ন্ত্রণ ও ফার্টিলিটি চিকিৎসাও রক্তের জমাট বাঁধা ও কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।


 অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন


ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, অল্প নড়াচড়া, আর উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার— এই অভ্যাসগুলো হার্টের সবচেয়ে বড় শত্রু। এগুলোর কারণে রক্তচাপ ও রক্তে চিনি বেড়ে যায়, যা হার্ট অ্যাটাকের প্রধান ভিত্তি তৈরি করে।


 বিদ্যমান রোগ


অনেক তরুণীই হাই কোলেস্টেরল, হাই ব্লাড প্রেসার, বা ডায়াবেটিস থাকা সত্ত্বেও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান না। কারণ সমাজে এখনো ধারণা আছে — হৃদরোগ কেবল পুরুষদের সমস্যা। এই অজ্ঞানতার ফলেই অনেক নারী সময় মতো চিকিৎসা পান না।


সংক্ষেপে বললে, 


অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ছে মূলত মানসিক চাপ, হরমোনের ওঠানামা, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও অজ্ঞানতার কারণে। সময়মতো চেকআপ, নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও মানসিক শান্তিই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ।

 

 

 

 

 সূত্র :Times of India

 

Post a Comment

أحدث أقدم