পেটের মেদ বেড়েই চলেছে? কমাবেন কীভাবে ও এটি শরীরের কী ক্ষতি করে জানুন


পেটের মেদ: শুধু সৌন্দর্যের নয়, বড় স্বাস্থ্যঝুঁকিও







আজকের ব্যস্ত জীবনে পেটের চারপাশে জমতে থাকা চর্বি বা “বেলি ফ্যাট” অনেকের কাছেই সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। কেউ জিমে যান, কেউ আবার এটিকে তেমন গুরুত্বই দেন না। কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, পেটের অতিরিক্ত চর্বি শরীরের অন্য অংশের চর্বির চেয়ে অনেক বেশি ক্ষতিকর।




পেটের চর্বি থেকে যে রোগগুলো হতে পারে


হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, পেটের চর্বি শরীরে ‘সাইটোকাইন’ ও ‘অ্যাঞ্জিওটেনসিন’ নামক প্রোটিনের উৎপাদন বাড়ায়, যা রক্তনালী সংকুচিত করে, প্রদাহ বাড়ায় এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি করে তাছাড়া যে গুলো রোগ মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি হয় তা হলো 

1.উচ্চ রক্তচাপ

2.টাইপ-২ ডায়াবেটিস

3.হৃদরোগ ও স্ট্রোক

4.ডিমেনশিয়া

5. এবং কিছু ধরনের ক্যান্সার


ফোর্টিস এসকর্টস হাসপাতালের সিনিয়র কার্ডিওলজিস্ট ডা. শিব কুমার চৌধুরী বলেন,
পেটের চর্বি ভেঙে গেলে সেখান থেকে ক্ষতিকর উপাদান নিঃসৃত হয় যা হৃদযন্ত্রের ধমনিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে ও ইনসুলিন প্রতিরোধ বাড়ায়।”





পেটের চর্বি বাড়ার মূল কারণ গুলো -


বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন কারণে পেটের চর্বি বাড়তে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- 
1.জেনেটিক (বংশগত) প্রভাব
2.হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
3.বয়স ও মেনোপজ
4.ঘুমের ঘাটতি
5.মানসিক চাপ
5.অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও বসে থাকা জীবনযাপন






 সুষম খাদ্য গ্রহণের গুরুত্ব দেওয়া -


খাবারে পর্যাপ্ত ফাইবার ও প্রোটিন থাকলে ক্ষুধা কম লাগে ও ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন—
ডিম, দই, দুধ, মাছ, মুরগি
ডাল, সয়া, বাদাম ও সবুজ শাকসবজি, হোল গ্রেইন, পাউরুটি ও ফলমূল ইত্যাদি। 

 

 



এবং যে খাবার গুলা এড়িয়ে চলবেন -

সাদা পাউরুটি, চিপস, ক্র্যাকার্স, চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার, অ্যালকোহল ও ধূমপান এই খাবার গুলা মেদ বাড়াতে কার্যকরি এবং শরীরের এর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে, তাই এই খাবার গুলা মুখের স্বাদে না খেয়ে এগুলা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। 




 রাতে খাওয়া ও ঘুমের সঠিক সময় নির্ধারণ করা -

ঘুমানোর অন্তত ২–৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করা জরুরি।
কারণ রাতে খাওয়া ক্যালোরি শরীরে ব্যবহৃত না হয়ে চর্বি হিসেবে জমে যায়, প্রয়োজনে রাতে একটু কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। 





পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা-


ঘুম কম হলে শরীরে ঘ্রেলিন হরমোন বেড়ে ক্ষুধা বাড়ায়। আবার মানসিক চাপ বাড়লে কর্টিসল হরমোন বৃদ্ধি পায়, যা পেটের চর্বি জমার অন্যতম কারণ।
তাই প্রতিদিন অন্তত ৭–৮ ঘণ্টা ঘুম ও মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করুন।

 


 

 

নিয়মিত ব্যায়াম:  সবচেয়ে কার্যকর উপায়- 


নিয়মিত হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং, যোগব্যায়াম ও সাঁতার ক্যালোরি পোড়ায় ও বিপাকক্রিয়া বাড়ায়।
প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করলেও পেটের চর্বি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক কমে। তাছাড়া পেটের চর্বি কমানোর জন্য নিদ্রিষ্ট কিছু ব্যায়াম আছে, যা বেশ কার্যকারী ইউটিউব দেখে চেষ্টা করুন
। 



সব শেষে,
পেটের মেদ কমানো শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয় — এটি জীবন রক্ষারও একটি অভ্যাস।
সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক প্রশান্তিই হল এই যুদ্ধের মূল অস্ত্র।
আজ থেকেই শুরু করুন নিজের যত্ন।
তবু ও সব থেকে কার্যকারী হতে পারে নিয়মিত ব্যায়াম করা,  নিয়মিত সময় করে শরীরচর্চা করুন  নিজের ফিটনেস  ধরে রাখুন।

Post a Comment

أحدث أقدم